নিজস্ব প্রতিবেদক : শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্যে বন্ধ ঘোষণা হলেও ক্যাম্পাস উত্তাল। কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা উপেক্ষা করে সেখানে অবস্থানকারী শিক্ষার্থীরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবে। প্রশাসনিক ভবন ও হলগুলোসহ সকল ভবনে শিক্ষার্থীরা তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে।
আবাসিক শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে একাত্ম হয়েছে অন্যান্য শিক্ষার্থীও। ছাত্রলীগের একাংশও সমর্থন জানিয়েছে। মিছিলে-বিক্ষোভে কাঁপছে ক্যাম্পাস। আছে পুলিশও। তবে রবিবারের মতো মারমুখি নয়। আন্দোলনকারীরাও নিয়মতান্ত্রিক পথে দাবি আদায়ে সোচ্চার রয়েছে। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা পুলিশকে ফুল উপহার দিতে যায়।
অন্যদিকে শাবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমদ জানিয়েছেন, বহিরাগতরা ইন্ধন দিচ্ছে।
শাবিপ্রবির বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের অব্যবস্থাপনা ও হল প্রভোস্টের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে রবিবার সন্ধ্যায় পুলিশের কয়েক দফা সংঘর্ষে পুলিশসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়।
শুক্রবার থেকে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা রবিবার বিকেলে ড ওয়াজেদ মিয়া (আইসিটি) ভবনে উপচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমদকে অবরুদ্ধ করলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠে। সন্ধ্যার পরপর পুলিশ সেখান থেকে শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দিতে গেলে সংঘর্ষ বাঁধে। এ সময় ক্যাম্পাস রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। শিক্ষার্থীরা পুলিশের দিকে ইটপাটকেল ছুঁড়তে থাকে। পুলিশও টিয়ার গ্যাস, শটগানের গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে দিয়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে ফটকের তালা ভেঙ্গে পুলিশ উপাচার্যকে উদ্ধার করে বাসভবনে পৌঁছে দেয়।
শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি রবিবার ক্যাম্পাসে সংঘটিত ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে।
সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক তুলসী কুমার দাস ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মহিবুল আলম এক বিবৃতিতে বলেছেন, যেসব ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে তাতে শাবি শিক্ষক সমিতি স্তম্ভিত, মর্মাহত ও লজ্জিত। নরকীয় এই ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদেরকে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।
শিক্ষক নেতৃবৃন্দ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকসহ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের যারা আহত হয়েছেন তাদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে শাবিপ্রবি প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি ক্যাম্পাসে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আহতদের চিকিৎসার যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। চিকিৎসাজনিত যাবতীয় ব্যয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বহন করবে।
Leave a Reply