হবিগঞ্জ প্রতিনিধি : প্রায় ৭ মাস পর হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলায় তরুণী হত্যার রহস্য উদঘাটিত হয়েছে। প্রেমিকই স্ত্রীর সহযোগিতায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটায়। পুলিশের হাতে গ্রেফতারের পর দু’জনে বুধবার বিকেলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
বুধবার সন্ধ্যায় নিজের কার্যালয়ে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যাহ এ তথ্য নিশ্চিত করেন জানান, গত ৬ ফেব্রুয়ারি দিনগত রাতে চুনারুঘাট উপজেলার রানীগাঁও ইউনিয়নের যুগির আসন নামক টিলায় এক তরুণীর মরদেহ পাওয়া যায়। তার থুতনির নিচে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন থাকায় পুলিশ নিশ্চিত হয় এটি হত্যাকাণ্ড। তাই পুলিশ বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি দিয়ে হত্যা মামলা রুজু করে।
পুলিশ সুপার জানান, ২০/২৫ দিন পূর্বে পার্শ্ববর্তী করাঙ্গী নদীর তীরে ফারুক নামের এক লোককে ঢাকা থেকে এনে হত্যার উদ্দেশ্যে ছুরিকাঘাত করা হয়। এ ঘটনার তদন্তকালে পুলিশ জানতে পারে, পাচারগাঁও গ্রামের এক ব্যক্তি পরিচয় গোপন করে কাওছার নামে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। পুলিশ আরো তথ্য পায়, তার প্রকৃত নাম আফসার মিয়া। সে মৌলভীবাজার থেকে ঘটনার রাতে স্ত্রী রিপা বেগমসহ জিন্স পড়া এক মেয়েকে নিয়ে মায়ের কাছে বেড়াতে এসেছিল। রাতে খাওয়া দাওয়া শেষে চলে যায়। তার মাও বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এসপি জানান, তরুণী হত্যাকাণ্ডে আফসার মিয়া জড়িত থাকার বিষয়ে আরো নিশ্চিত হতে এক মহিলা পুলিশ তার সঙ্গে প্রেমের অভিনয় শুরু করেন। একপর্যায়ে সে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে এসে পুলিশের জালে আটকা পড়ে। পুলিশ হেফাজতে হত্যাকাণ্ডের দায়ও স্বীকার করে নেয়। সে জানায়, তরুণীর নাম রোকসানা আক্তার মিষ্টি (২২)। বাড়ি নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার কামালপুর গ্রামে। তার বাবার নাম খোরশেদ আলম মজুমদার। মায়ের সাথে রাগ করে এসে সে মৌলভীবাজার শহরে বাসা ভাড়া করে থাকতো। একপর্যায়ে সেখানে পাশাপাশি থাকার সুবাদে আফসার মিয়ার সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে, যা শেষপর্যন্ত দৈহিক সম্পর্কে গড়ায়। এ কথা জানতে পেরে আফসার মিয়ার স্ত্রী রিপা বেগম বাপের বাড়ি চলে যায়। শর্ত দেয়, রোকসানা আক্তার মিষ্টিকে সরিয়ে না দিলে সে আর স্বামীর ঘরে ফিরবেনা। তখন স্বামী-স্ত্রী মিলে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন, চুনারুঘাট থানার ওসি শেখ নাজমুল হক ও ওসি-তদন্ত চম্পক দাম।
Leave a Reply