নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশে নিযুক্ত নেপালের রাষ্ট্রদূত ড বনশিধর মিশ্রা বলেছেন, বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে অন এরাইভ্যাল ভিসাসিস্টেম রয়েছে। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে দুই দেশের মধ্যে পর্যটন ও বাণিজ্য সম্পর্ক বৃদ্ধি করা যেতে পারে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি নেতৃবৃন্দ ও সিলেটের বিজনেস কমিউনিটির সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি একথা বলেন।
চেম্বার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন, সিলেট চেম্বারের সভাপতি আবু তাহের মো শোয়েব। আলোচনায় অংশ নেন, রাষ্ট্রদূতের সহধর্মিণী দুর্গা মিশ্রা, নেপাল দূতাবাসের সেকেন্ড সেক্রেটারি রঞ্জন যাদব, সিলেট চেম্বারের জ্যেষ্ঠ সহ সভাপতি চন্দন সাহা, সহ সভাপতি তাহমিন আহমদ, এফবিসিসিআইর পরিচালক খন্দকার সিপার আহমদ, অধ্যাপক ড ইঞ্জিনিয়ার এম ইকবাল, অধ্যাপক মো তানভির আহমেদ চৌধুরী, ড এম এ রকিব, ড মো রুবেল আহমেদ, সিলেট চেম্বারের পরিচালক মো মামুন কিবরিয়া সুমন, মো সাহিদুর রহমান, পিন্টু চক্রবর্তী, মুশফিক জায়গীরদার, আব্দুর রহমান, ফালাহউদ্দিন আলী আহমদ, মো আব্দুর রহমান জামিল, আলীমুল এহছান চৌধুরী, ওয়াহিদুজ্জামান চৌধুরী, মো আমিনুজ্জামান জোয়াহির, খন্দকার ইসরার আহমদ রকী, এফবিসিসিআইর সাবেক পরিচালক মো হিজকিল গুলজার, সাবেক পরিচালক মুজিবুর রহমান মিন্টু, ইউকেবেটর চেয়ারম্যান এম এ সায়েম, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি মুহিত চৌধুরী, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহ্ দিদার আলম নোবেল, শিল্পোদ্যোক্তা মো মইনুল ইসলাম চৌধুরী, মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম চৌধুরী, মো আবুল কালাম, শফিউল আলম জুয়েল, মো ফেরদৌস আলম, সামিয়া বেগম চৌধুরী, হেলেন আহমেদ, সুষমা সুলতানা রুহি ও সানজিদা খানম।
মতবিনিময় সভায় নেপালের রাষ্ট্রদূত বলেন, নেপাল বাংলাদেশের প্রতিবেশী ও বন্ধুরাষ্ট্র। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় নেপালে রাজতন্ত্র বিদ্যমান ছিল। ২০০৮ সাল থেকে নেপাল প্রজাতন্ত্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে বাঙালি জনতার দুর্বার প্রতিরোধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগ নেপালের গণতন্ত্রকামী মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছে।
তিনি বলেন, নেপাল ও বাংলাদেশের মধ্যবর্তী সর্বনিম্ন দূরত্ব মাত্র ৩৭ কিলোমিটার; কিন্তু তা সত্ত্বেও নেপালের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক আশানুরূপ নয়। কারণ ট্যারিফ সংক্রান্ত কিছু জটিলতা রয়েছে। এই সমস্যাগুলো নিরসনে কাজ চলছে। এ লক্ষ্যে আগামী অক্টোবর মাসে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
ড বনশিধর মিশ্রা উল্লেখ করেন, নেপালে ফলমূল ও শাক-সবজির দাম বাংলাদেশ থেকে তুলনামূলকভাবে কম। অন এরাইভ্যাল ভিসা সিস্টেম কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশী আমদানিরকারকরা নেপাল থেকে ফলমূল ও শাক-সবজি আমদানি করতে পারেন।
তিনি বাংলাদেশের অভ্যন্তরে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশের সাথে নেপালের রেল যোগাযোগ স্থাপন করা গেলে দু’দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরো জোরদার হবে।
তিনি জানান, অতিশীঘ্রই বাংলাদেশ-নেপাল চেম্বার অব কমার্স গঠিত হতে যাচ্ছে, যেখানে বাংলাদেশ ও নেপালের প্রসিদ্ধ ব্যবসায়ীগণ অন্তর্ভুক্ত থাকবেন। এর মাধ্যমে দুই দেশের বাণিজ্য ও শিল্প উন্নতির দিকে এগিয়ে যাবে বলে বিশ্বাস রাখা যায়।
সভাপতির বক্তব্যে সিলেট চেম্বার সভাপতি আবু তাহের মো শোয়েব বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ বিরাজমান। বিশেষ করে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য বর্তমান সরকার অত্যন্ত আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, সিলেটের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৭০০ নেপালি ছাত্র-ছাত্রী পড়াশোনা করছে।
তিনি আরো বলেন, পর্যটনখাতে সিলেট অত্যন্ত সম্ভাবনাময়। যৌথভাবে উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে দুই দেশের পর্যটন শিল্পকে আরো এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হতে পারে।
অন্য বক্তাগণ সিলেটের শিল্প, কৃষি, পর্যটন ও শিক্ষাখাত নিয়ে বক্তব্য রাখেন। তারা বলেন, সিলেটে অনেকগুলো প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজ রয়েছে। এগুলো থেকে নেপালের ছাত্র-ছাত্রীরা কমখরচে উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। এছাড়াও নেপাল সিলেট থেকে কৃষি যন্ত্রপাতি ও কৃষিপণ্য আমদানি করতে পারে।
সিলেটের শিল্প মালিকগণ নেপালের রাষ্ট্রদূতকে সিলেটের শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো পরিদর্শনের অনুরোধ জানান।