তন্দ্রা দেব রায় রাজু, মাধবপুর : হবিগঞ্জের মাধবপুরে আসল পরিচয় গোপন করে বিয়ের পর যৌতুকের জন্যে নির্যাতনের অভিযোগে স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রী আদালতে মামলা করেছেন। এখন মামলা তুলে নিতে মোবাইল ফোনে হুমকি দেওয়া হচ্ছে স্তার ভাইকে। এ ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, মাধবপুর পৌর এলাকার কাপড়পট্টির কেশব বণিকের মেয়ে কেয়া বণিকের সঙ্গে ২০১৭ সালে বিয়ে হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পূর্ব মেড্ডা এলাকার অসিত বণিকের ছেলে রাহুল বণিকের। তবে ২০১৮ সালে ১৮ নভেম্বর এফিডেভিটের মাধ্যমে বিয়ের কথা ঘোষণা করা হয়।
বিয়ের সময় কেয়া বণিকের বাবা জামাইকে ফ্রিজ, টেলিভিশন, কাঠের ফার্ণিচার ও অন্যান্য সামগ্রী সহ প্রায় ৪০ ভরি স্বর্ণালংকার দেন; কিন্তু কেয়া বণিক স্বামীর বাসায় যাওয়ার পর থেকে তার স্বামী ও শ্বশুর পরিবারের লোকজন যৌতুকের জন্য তাকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন শুরু করে। তিনি তখন বাপের বাড়ি থেকে ২০ লাখ টাকা নিয়ে তার স্বামীকে দেন।
পরবর্তী সময়ে রাহুল বণিক শ্বশুরবাড়ি থেকে আরও ৪০ লাখ টাকা এনে দিতে স্ত্রীর উপর চাপ সৃষ্টি করে; কিন্তু কেয়া বণিক টাকা এনে না দেওয়ায় তার উপর নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যায়।
এক পর্যায়ে রাহুল বণিক ও তার পরিবারের লোকজন কেয়া বণিককে মারপিট করে তার বাবার বাড়িতে রেখে চলে যায়। এ ঘটনায় নির্যাতিতা স্ত্রী হবিগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-০৩ আদালতে তার স্বামী রাহুল বণিক, শ্বশুর অসিত বণিক, কাকা শ্বশুর উত্তম বণিত ভোলা ও শ্বাশুড়ি সুচিত্রা বণিককে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলা করার পর রাহুল বণিক আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে কেয়া বণিকের ভাই বিশাল বণিককে গত ১৪ জুলাই মোবাইল ফোনে মামলা তুলে না নিলে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এ ব্যাপারে বিশাল বণিক মাধবপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেন।
বিশাল বণিক জানান, রাহুল বণিক প্রতারণা করে তার বোনকে বিয়ে করেছে। বিয়ের পর তারা জানতে পারেন, অসিত বণিককে বাবা হিসাবে পরিচয় দিলেও তিনি আসলে রাহুল বণিকের বাবা নন। রাহুল বণিক আসলে ভারতীয় নাগরিক। তার প্রকৃত নাম অজিতেশ সেন। পিতার নাম মিলন কান্তি সেন। তাদের মূল বাড়ি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পশ্চিম ত্রিপুরা এলাকার আগরতলা কলেজের নিকট জুগেন্দ্রগড় গেদুমিয়া মসজিদের পাশে শিবনগরে। সে মিথ্যা পরিচয় দিয়ে বিয়ে করেছে।
কেয়া বণিকের বাবা কেশব বণিক জানান, রাহুল বণিকের হুমকি-ধমকিতে তারা নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছে।
Leave a Reply