নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য, সাবেক মন্ত্রী ড আবদুল মঈন খান বলেছেন, সরকার হাজার হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের গল্প শুনিয়ে দেশকে ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের দিকে ঠেলে দিয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাটের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে। বিদেশে পাচার করেছে হাজার হাজার কোটি টাকা। সরকারের দুর্নীতির মাশুল দিতে হচ্ছে সাধারণ জনগণকে। বিনাভোটে নির্বাচিত সরকারের জনগণের প্রতি কোন দায়বদ্ধতা নেই।
প্রবীণ এই বিএনপি নেতা শনিবার বিকেলে সারাদেশে নজিরবিহীন লোডশেডিং ও জ্বালানি খাতে অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে দলের সিলেট মহানগর শাখা আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছিলেন।
তিনি আরও বলেছেন, বিএনপি মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার রাজনীতিতে বিশ্বাসী। এখন দেশে আইনের শাসন নেই। নেই খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান ও শিক্ষার অধিকার। কথা বলার অধিকারও নেই। সরকার মেগা উন্নয়নের মিথ্যা বুলি দিয়ে জাতির সঙ্গে প্রতারণা করছে। এজন্য সরকারকে অবশ্যই জবাবদিহী করতে হবে। এই সরকারের হাত থেকে দেশের অধিকারবঞ্চিত মানুষকে মুক্ত করতে সংগ্রাম চলছে।
ড আবদুল মঈন খান দাবি করেন, দেশ ও জাতি চরম ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। এই ক্রান্তিকাল গণতন্ত্র হত্যাকারী আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের নিজের হাতে তৈরি। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে জনজীবন অতিষ্ঠ। ভয়াবহ বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের প্রভাব পড়ছে রাষ্ট্রের প্রতিটি সেক্টরে। দেশ ক্রমশই ভয়াবহ পরিস্থিতির দিকে ধাবিত হচ্ছে।
তিনি অভিযোগ করেন, সরকার দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। জনগণের কল্যাণের বিপরীতে জনদুর্ভোগ সৃষ্টিতে লিপ্ত। অন্যদিকে বিএনপি নিয়মতান্ত্রিক শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বিশ্বাস করে। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় চলমান কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া হলে তা যে কোন সময় গণবিস্ফোরণে রূপ নিতে পারে। দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হলে নিরপেক্ষ সরকারের কোন বিকল্প নেই। ইতিহাস স্বাক্ষী, এই সরকারকে ক্ষমতায় রেখে দেশে নিরপেক্ষ নির্বাচন কোনভাবেই সম্ভব নয়। বর্তমান সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনে বিএনপি যাবেনা যাবেনা। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে অবশ্যই এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরে যেতে হবে।
সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদমিনার প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে মহানগর বিএনপির আহবায়ক আব্দুল কাইয়ুম জালালী পংকীর সভাপতিত্বে এবং যুগ্মআহবায়ক হুমায়ুন কবির শাহীন ও রেজাউল হাসান কয়েস লোদীর যৌথ পরিচালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন, দলের চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বিএনপির জেলা সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, যুবদলের মহানগর আহবায়ক নজিবুর রহমান নজিব, জেলা আহবায়ক সিদ্দিকুর রহমান পাপলু, স্বেচ্ছাসেবক দলের জেলা আহবায়ক আব্দুল আহাদ খান জামাল, মহানগর আহবায়ক আব্দুল ওয়াহিদ সুহেল, ছাত্রদলের মহানগর সভাপতি সুদীপ জ্যোতি এষ, জেলা সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন দিনার প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল মহানগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে কোর্ট পয়েন্টে গিয়ে শেষ হয়।
Leave a Reply