জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো রহমাতুল মুনিম বলেছেন, জাতীয় বাজেটে ব্যবসায়ী মহল থেকে পাওয়া প্রস্তাবনাগুলো গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হয়। এবারও এর ব্যতিক্রম হবে না।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি আয়োজিত প্রাক-বাজেট আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
সোমবার সকালে সিলেট চেম্বার মিলনায়তনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আগামী ২০২১-২০২২ অর্থবছরের জন্য ব্যবসা-বাণিজ্যবান্ধব বাজেট প্রণয়নে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিসহ সারাদেশের ব্যবসায়ী মহলের নিকট হতে প্রাপ্ত উপযুক্ত প্রস্তাবনাসমূহ যথাযথভাবে বিবেচনার আশ্বাস দেন।
আলোচনায় স্বাগত বক্তব্যে সিলেট চেম্বার সভাপতি আবু তাহের মো শোয়েব বলেন, জাতীয় বাজেট ঘোষণার প্রাক্কালে ব্যবসায়ী মহলের সঙ্গে মিলিত হওয়া ব্যবসাবান্ধব বাজেট প্রণয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নের স্বার্থে যেসব বৃহৎ পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন তা সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নে রাজস্ব আহরণের বিকল্প নেই। তবে চলমান করোনা পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীদের সুবিধা-অসুবিধার প্রতি লক্ষ্য রাখাও একান্ত প্রয়োজন।
এসসিসিআই সভাপতি ইনওয়ার্ড রেমিটেন্সের উপর ১০% কর মওকুফ, পর্যটন শিল্পের বিকাশে হোটেল ও রিসোর্ট নির্মাণের ক্ষেত্রে ১০ বছরের কর অবকাশ প্রদান, করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা নির্ধারণ ও ট্রেড লাইসেন্স নতুন/ নবায়নের ক্ষেত্রে অগ্রিম কর প্রদান রহিতকরণ সহ বিভিন্ন প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, কয়লাসহ যেকোন পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে আমদানিকারকগণ অগ্রিম শুল্ক-কর পরিশোধ করে থাকেন; কিন্তু কোন কারণে পণ্য আমদানি না হলে সরকারি কোষাগারে জমাকৃত অর্থ ফেরৎ পেতে আমদানিকারকগণকে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়।
আবু তাহের মো শোয়েব কয়লাসহ যেকোন পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে অগ্রিম শুল্ক-করাদি পরিশোধের বিধান রহিত করা একান্ত প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন।
তিনি ব্যবসাবান্ধব বাজেট প্রণয়নে সিলেট চেম্বারের প্রস্তাবনা যথাযথভাবে মূল্যায়নের জন্যে সরকারের প্রতি আহবান জানান।
আলোচনাকালে অন্যান্য বক্তা বলেন, করোনা মহামারির কারণে ব্যবসায়ীগণ দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। অনেক ব্যবসায়ী প্রায় দেউলিয়া। তাই বাজেট প্রণয়নে ব্যবসায়ীদের দিকে লক্ষ্য রাখা উচিত।
তারা করোনাকালীন সময়ে ট্যাক্স রিটার্নের ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের ফাইল অডিটে না ফেলা, জীবন রক্ষাকারী মেডিক্যাল ইকুইপমেন্টের আমদানি শুল্ক মওকুফ, দেশীয় কৃষি মেশিনারিজ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে আমদানিকৃত কৃষি মেশিনারিজের আমদানি শুল্ক বৃদ্ধি, কৃষি যন্ত্রপাতি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সমূহকে অগ্রিম ট্যাক্স থেকে অব্যাহতি প্রদান, পর্যটন খাতে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রণোদনা প্রাপ্তি সহজীকরণ, করোনাকালীন হোটেল-মোটেলের উপর আরোপিত ১৫% ভ্যাট হ্রাস করে ৫% ধার্য্যকরণ, সিলেটের সকল শুল্ক স্টেশনে ব্যাংক বুথ স্থাপন এবং করদাতার আয় বছরপ্রতি ৫% হারে বৃদ্ধি হলে সেই করদাতাকে অডিট থেকে অব্যাহতি প্রদানসহ বিভিন্ন প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।
আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন, কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট সিলেটের কমিশনার মোহাম্মদ আহসানুল হক, কর অঞ্চল-সিলেটের কর কমিশনার মো সাইফুল হক, কাস্টমসের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ সফিউর রহমান, এসসিসিআইর জ্যেষ্ঠ সহ সভাপতি চন্দন সাহা, সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক শফিউল আলম চৌধুরী, এসসিসিআইর পরিচালক ও ভ্যাট, বাজেট, কর সাব কমিটির আহবায়ক মো এমদাদ হোসেন, পরিচালক মো আতিক হোসেন, আলীমুল এহছান চৌধুরী, সাবেক জ্যেষ্ঠ সহ সভাপতি শাহ আলম, সাবেক পরিচালক মো বশিরুল হক, মুজিবুর রহমান মিন্টু, সিলেট জেলা আয়কর আইনজীবী সমিতির সভাপতি অধ্যাপক শফিকুর রহমান, সিলেট উইমেন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি স্বর্ণলতা রায়, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি মুহিত চৌধুরী, সিলেট হসপিটাল এন্ড ডায়গনস্টিক সেন্টার মালিক সমিতির সভাপতি ডা নাসিম হোসেন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ফাহিম আহমদ চৌধুরী, সুমায়েত নুরী চৌধুরী জুয়েল, আব্দুল জব্বার জলিল, সিদ্দিুকুর রহমান, অ্যাডভোকেট মৃত্যুঞ্জয় ধর ভোলা, অ্যাডভোকেট মো আবুল ফজল, অ্যাডভোকেট মাজহারুল হক, মোয়াম্মির হোসেন চৌধুরী, মো আমিনুল হক, মোতাচ্ছিরুল ইসলাম, সালাউদ্দিন চৌধুরী বাবলু প্রমুখ।