এনা, নিউইয়র্ক : জাতিসংঘ সদর দফতরে আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে কর্তব্যরত অবস্থায় আত্মোৎসর্গকারী বাংলাদেশের ৩ জন সহ বিশ্বের ৪৩টি দেশের ১১৭ শান্তিরক্ষীকে ‘দ্যাগ হ্যামারশোল্ড মেডেল’ প্রদান করা হয়েছে।
বুধবার জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেজ বাংলাদেশ সহ ৪৩টি দেশের স্থায়ী প্রতিনিধির হাতে এই সম্মাননা তুলে দেন।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের মালি মিশনে কর্তব্যরত অবস্থায় ২০১৬ সালের ১৩ অক্টোবর প্রাণ হারান বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সৈনিক মোহাম্মদ আবুল বাসার। এর আগে ঐ বছরের ১৫ মে একই মিশনে কর্তব্যরত থাকাকালীন বাংলাদেশ পুলিশের কনস্টেবল মোতাহের হোসেন ও মোহাম্মদ সামিদুল ইসলাম জীবন উৎসর্গ করেন।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এই সম্মাননা গ্রহণ করেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন। এ সময় বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের ডিফেন্স অ্যাডভাইজর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খান ফিরোজ আহমেদ সহ জাতিসংঘে কর্মরত বাংলাদেশ সেনা, নৌ, বিমান ও পুলিশ বাহিনীর কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানের শুরুতেই মহাসচির গুতেরেজ কর্তব্যরত অবস্থায় জীবনদানকারী সামরিক ও বেসামরিক শান্তিরক্ষী কর্মীদের বিদেহী আত্মার স্মরণে জাতিসংঘ সদর দফতরের উত্তর লনে অবস্থিত পিসকিপিং মেমোরিয়াল সাইটে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
জাতিসংঘ নিযুক্ত সদস্য রাষ্ট্রসমূহের স্থায়ী প্রতিনিধি সহ বিভিন্ন পর্যায়ের কূটনৈতিক, সামরিক ও পুলিশ বাহিনীর কর্মকর্তা এবং জাতিসংঘের কর্মকর্তা সহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন করে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘আজ যাদেরকে আমরা সম্মান জানালাম তারা পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্দশাগ্রস্ত মানুষগুলোকে রক্ষা এবং ঐ সকল দেশকে সংঘাত থেকে শান্তিতে উত্তরণের মতো কঠিন কাজে সহযোগিতা করতে গিয়ে জীবন দিয়েছেন।’
তিনি বিশ্ব শান্তির জন্য জীবনদানকারী এ সকল শান্তিরক্ষী কর্মীর সর্বোচ্চ অবদান গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন।
এর আগে আত্মদানকারী শান্তিরক্ষীদের প্রতি সম্মান জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
১৯৮৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত শান্তিরক্ষা মিশনে কর্তব্যরত অবস্থায় বাংলাদেশের ১৩৩ শান্তিরক্ষী আত্মোৎসর্গ করেছেন।