নবীগঞ্জ প্রতিনিধি : হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে ছেলে-মেয়ের জন্মসনদ সংশোধন করাতে গিয়ে এক বছর ধরে নানা ভোগান্তির শিকার এক নারী শেষপর্যন্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দ্বারস্থ হয়েছেন।
সোমবার দুপুরে নবীগঞ্জ পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব তিমিরপুর এলাকার মাহমুদা আক্তার ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এতে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে জানান, গত বছরের অক্টোবর মাসের শেষ দিকে তিনি তার তিন ছেলে-মেয়ের জন্মনিবন্ধন সংশোধন করাতে পৌরসভায় যান। তখন তাকে তার ও তার স্বামীর এনআইডি, জন্মনিবন্ধন সনদ ও ছেলে-মেয়েদের আগের জন্মনিবন্ধন নিয়ে আসতে বলা হয়; কিন্তু তিনি প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র দেওয়ার পরও পৌর কর্মচারী এলেমান আহমেদ চৌধুরী ও বনানী দাশ আজ/কাল/পরশু আসনে বলে সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন। এক পর্যায়ে বলে দেন, পৌরসভা কার্যালয়ে সংশোধনের আবেদন নেওয়া হয়না।
পরে তিনি জানতে পারেন, ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা আতাউর রহমান শামীমের ওসমানী রোডের দোকানে আবেদন করা হয়; কিন্তু একাধিকবার সেখানে গিয়েও তিনি আবেদন করতে ব্যর্থ হন। এভাবেই প্রায় এক বছর পার হয়ে যায়।
এর মাঝেই তার এক নবজাতক মেয়ে জন্মের পরদিনই মারা যায়। তিনিও বেশ অসুস্থ। এ অবস্থায়ই পৌরসভায় আবেদনের জন্য যান তিনি। সামনে তার মেয়ে ও ছেলের পরীক্ষা। তাদের রেজিস্ট্রেশন ও ইউনিক আইডি কার্ড তৈরির জন্য জন্মনিবন্ধন জরুরি। তাই ১৮ অক্টোবর পৌর ডিজিটাল সেন্টারে আবেদন করলে তাকে জানানো হয়, আবেদন হয়নি। পরে উপজেলা পরিষদের সামনে একটি দোকানে গিয়ে আবেদন করলে পৌর কর্তৃপক্ষ জানান, আবেদনটি তাদের কাছে পৌঁছেনি।
পরবর্তী সময়ে মাহমুদা আক্তার উপজেলা সহকারী প্রোগ্রামার কাজী মঈনুল হোসেনের কাছে গেলে তিনি জানান, আবেদন হয়েছে; কিন্তু পৌর কর্তৃপক্ষ তা অনুমোদন করেনি। তবে পৌরসভায় গিয়ে বললেই হবে।
পৌরসভায় গিয়ে তিনি প্রথমে ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা আতাউর রহমান শামীমের কাছে গেলে তিনি প্রশ্ন করেন, মাহমুদা আক্তার উপজেলা সহকারী প্রোগ্রামারের কাছে কেন গেলেন। পরে বলেন, মেয়রের স্বাক্ষর নিয়ে আসতে। অনেকক্ষণ অপেক্ষার পর মেয়রের স্বাক্ষর নিয়ে পৌর কর্মচারী এলেমান আহমেদ চৌধুরীর নিকট গিয়ে গেলে তিনি উত্তেজিত হয়ে উপজেলা সহকারী প্রোগ্রামারের নিকট যাওয়ার কৈফিয়ৎ চেয়ে তার সঙ্গে চরম দুর্ব্যবহার করেন।
মাহমুদা আক্তার পরে আবারও উপজেলা সহকারী প্রোগ্রামারের কাছে গেলে তিনি ৫ মিনিটের মধ্যেই সবকিছু ঠিক করে দেন; কিন্তু পৌরসভায় সংশোধিত প্রিন্ট কপির জন্য গেলে প্রিন্টারে সমস্যার অজুহাত দেখিয়ে ৪/৫ দিন পর তাকে আসতে বলা হয।
সোমবার ২৪ অক্টোবর প্রিন্ট কপি নেওয়ার জন্য তিনি পৌরসভায় গেলে বলা হয়, প্রিন্টার ঠিক হয়নি, ঠিক হলে এসে নিয়ে যেতে।
অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান শাহরিয়ার বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।