সাইফুল ইসলাম সুমন, জুড়ী : মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় ফুলতলা চা বাগানে বকেয়া মজুরির দাবিতে ও বাগান বন্ধের ঘোষণার প্রতিবাদে প্রায় দেড় হাজার চা শ্রমিক বিক্ষোভ করেছেন।
বুধবার, ২৮ আগস্ট সকাল থেকে চা বাগানের ফ্যাক্টরির সামনে শ্রমিকরা বিভিন্ন স্লোগানে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।
শ্রমিকরা জানান, গত ৯ সপ্তাহ ধরে তাদের মজুরি ও রেশন বন্ধ রয়েছে। তিন মাসের বেশি সময় ধরে বেতন পাচ্ছেন না কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এছাড়াও গত বছরের অক্টোবর থেকে বাগানের বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রয়েছে।
গত মার্চ মাস থেকে বাগান পরিচালনার জন্য কোনো টাকা দিচ্ছে না মালিক পক্ষ। এতে আয় থেকে ব্যয় বেশি হওয়ায় ম্যানেজমেন্টের পক্ষে চা পাতা বিক্রি করেও বাগান চালানো সম্ভব হচ্ছে না।
অন্যদিকে মজুরি ও রেশন না পেয়ে শ্রমিক পরিবারগুলো বেহাল অবস্থায় দিন কাটাছে। এর মধ্যেই দেশের চলমান রাজনৈতিক সংকট, অর্থনৈতিক মন্দা ও অন্যান্য ব্যবসায়িক নিয়ন্ত্রণ বহির্ভুত কারণ দেখিয়ে দি নিউ সিলেট টি এস্টেটস লিমিটেডের ফুলতলা চা বাগানের সকল কার্যক্রম আগামী ৮ অক্টোবর পর্যন্ত সাময়িকভাবে বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, দেশের সার্বিক অবস্থার উন্নতি হলে বাগান চালু হবে।
ফ্যাক্টরি ঘেরাও করে বিক্ষোভের খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর ওয়ারেন্ট অফিসার আকারুল ইসলাম, জুড়ী থানার ওসি মেহেদী হাসান, ফুলতলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম সেলু, ইউপি মেম্বার ইমতিয়াজ গফুর মারুফ ও স্বপন মল্লিক উপস্থিত হয়ে শ্রমিকদের সমস্যা দ্রুত সমাধানে পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আসে।
ফুলতলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল আলীম সেলু জানান, শ্রম আইন না মেনে এভাবে হঠাৎ চা বাগান বন্ধের নোটিশের প্রতিবাদে ও বকেয়া মজুরির টাকার দাবিতে শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে আন্দোলন করেছে।
সেনাবাহিনীর ওয়ারেন্ট অফিসার আকারুল ইসলাম বলেন, শ্রমিকদের সকল যৌক্তিক দাবি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
জুড়ী থানার ওসি মেহেদী হাসান জানান, শ্রমিকদের ন্যায্য বকেয়া মজুরি পেতে সবধরনের সহযোগিতা এবং খুব দ্রুত বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হবে।
ফুলতলা চা বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক শিহাব উদ্দিন জানান, আগামী ৮ অক্টোবর পর্যন্ত বাগান বন্ধ ঘোষণা দিয়ে মালিক পক্ষ থেকে একটা চিঠি দেওয়া হয়েছে। এদিকে বাগানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ৩ মাস থেকে বেতন বাকি রয়েছে।
Leave a Reply