নিজস্ব প্রতিবেদক : জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-৬ আসনে বিএনপি সম্ভাব্য প্রার্থী ফয়সল আহমদ চৌধুরী বলেছেন, গণতন্ত্রকামী সকল রাজনৈতিক দল যখন নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে রাজপথে আন্দোলন করছে ঠিক তখনই সমশের মবিন চৌধুরী আন্দোলনের পিঠে ছুরিকাঘাত করার অপতৎপরতা শুরু করেছেন।
শনিবার, ২১ অক্টোবর দুপুরে সিলেট মহানগরীর মিরবক্সটুলা এলাকায় একটি হোটেলে আহুত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
ফয়সল আহমদ চৌধুরী বলেন, ‘দলছুট, নীতিহীন ও পথভ্রষ্ট’ রাজনীতিবিদ সমশের মবিন চৌধুরী সরকারের ক্রীড়নক হয়ে কথিত একটি ‘কিংস পার্টি’র চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিয়ে আবারও সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার খায়েস নিয়ে নানা কুটচাল ও অপপ্রচার চালাচ্ছেন।
সম্প্রতি এক গোলটেবিল বৈঠকে গোলাপগঞ্জ-বিয়াীবাজার বিএনপি ও তাকে নিয়ে সমশের মবিন চৌধুরী চরম মিথ্যাচার করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, তার জনপ্রিয়তা নষ্ট করার উদ্দেশ্যই তা করা হয়েছে।
ফয়সল আহমদ চৌধুরী বলেন, ‘সমশের মবিন আমার ও স্থানীয় বিএনপি সম্পর্কে নানা বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করেছেন। তিনি রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ফোনে কিংবা সরাসরি আমার সঙ্গে তার কোনো কথা হয়নি; কিন্তু গোলটেবিল বৈঠকে তিনি চরম মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়ে আমার সাথে ফোনালাপের বিষয়ের অবতারণা করেছেন। আমি নিন্দা জানানোর পাশাপাশি অবিলম্বে এই বক্তব্য প্রত্যাহারের আহবান জানাচ্ছি।’
ফয়সল আহমদ চৌধুরী বলেন, রাজনীতিতে তার পথচলা সমশের মবিন চৌধুরীর মতো ডিগবাজির মাধ্যমে নয়। তিনি জাতীয়তাবাদী দলের একজন নিবেদিত কর্মী। ছাত্রদল থেকে রাজনীতি করছেন। দলে ত্যাগ ও অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে তাকে সিলেট-৬ আসনে (গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার) দলের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়।
সমশের মবিন চৌধুরীর বর্তমান কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে ফয়সল আহমদ চৌধুরী বলেন, ‘তিনি এক সময় বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন; কিন্তু দলের ক্রান্তিলগ্নে সরকারের দালালি করার উদ্দেশে রাজনীতি থেকে অবসর নেন। কিছুদিনের মধ্যেই তিনি বিকল্প ধারায় যোগ দিয়ে গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার আসনে সংসদ নির্বাচনে অংশ নেন। গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজারের মানুষ ঘৃণাভরে তাকে প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি ভোট পান মাত্র ১৯১টি। এরপর দীর্ঘদিন ঘাপটি মেরে বসে থাকেন।’
সিলেট-৬ আসনে দলের ও নিজের অবস্থা তুলে ধরে ফয়সল আহমদ চৌধুরী বলেন, অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে সাংগঠনিকভাবে গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজারে বিএনপি অনেক শক্তিশালী। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় সকল কর্মসূচি এই দুই উপজেলায় সফলভাবে পালন করা হচ্ছে; কিন্তু সরকারের দালালি করতে নেমে সমশের মবিন চৌধুরী তা দেখেও না দেখার ভান করছেন। তার এই ন্যাক্কারজনক ভূমিকার প্রতিবাদে স্থানীয় বিএনপি সম্প্রতি পৃথকভাবে মিছিল সমাবেশ করে প্রতিবাদ জানিয়েছে। এই দুই উপজেলায় তাকে ‘অবাঞ্চিত’ ঘোষণা করে তাকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার আহবান জানানো হয়েছে। শুধু তাই নয়-ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা তার কুশপুত্তলিকা পুড়িয়েছেন। তিনি স্থানীয় বিএনপির প্রতিবাদ ও দাবির প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করেন
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে সুচিকিৎসার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে ফয়সল আহমদ চৌধুরী বলেন, খালেদা জিয়ার কিছু হলে সরকারকেই সকল দায় বহন করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান মিজান, সিলেট জেলা সহসভাপতি আশিক উদ্দিন আশিক, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক মাহবুবুল হক চৌধুরী, বিয়ানীবাজার পৌর বিএনপির সভাপতি মিজানুর রহমান রুমেল, সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন জুয়েল, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছরওয়ার হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুর রহমান, গোলাপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি নোমান উদ্দিন মুরাদ, সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল, উপজেলা যুবদলের আহবায়ক মামুন আহমদ রিপন, পৌর যুবদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্মআহবায়ক আব্দুল আজিজ মুন্না প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply