নিজস্ব প্রতিবেদক : কাস্টমস ও ভ্যাট কর্তৃপক্ষের অতিরিক্ত রাজস্বের চাপে আমদানিকারকরা বৃহত্তর সিলেটের সকল সীমান্ত দিয়ে সকল ধরনের পণ্য আমদানি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছেন।
বৃহস্পতিবার, ১৭ আগস্ট বিকেল ৪টায় চেম্বার মিলনায়তনে সিলেটের বিভিন্ন সীমান্তের আমদানিকারকগণ দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির নেতৃবৃন্দকে আমদানি বাণিজ্যে বিরাজমান সমস্যাবলী সম্পর্কে অবহিত করে আমদানি বন্ধের ঘোষণা দেন।
আমদানিকারকগণ সিলেট চেম্বার নেতৃবৃন্দকে জানান, কিছুদিন যাবৎ কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট, সিলেটের পক্ষ থেকে ব্যবসায়ীগণকে অতিরিক্ত হারে রাজস্ব প্রদানের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। ব্যবসায়ীগণ এ ব্যাপারে কাস্টমস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনায় বসেও কোন ফল পাননি। নিয়ম বহির্ভুতভাবে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ আমদানিকৃত পণ্যের উপর ৫০% হারে মূল্য বৃদ্ধি করে তার উপর ভ্যাট দেওয়ার জন্য আমদানিকারকগণকে চাপ দিচ্ছেন; কিন্তু প্রকৃতপক্ষে কখনওই ক্রয়কৃত মূল্য থেকে ৫০% হারে মূল্য বৃদ্ধি করে পণ্য বিক্রি করা সম্ভব নয়।
আমদানিকারকগণ আরও জানান, টনপ্রতি চুনাপাথর ১০ ডলার করে ও বোল্ডার পাথর ৮ ডলার করে এলসি খোলা হলেও কাস্টম্স কর্তৃপক্ষ এতদিন চুনাপাথরের এসেসমেন্ট রেইট ১১.৫ ডলার এবং বোল্ডার পাথরের এসেসমেন্ট রেইট ১১ ডলার করে নির্ধারণ করে রাজস্ব আদায় করেছেন। এখন হঠাৎ করে চুনাপথরের এসেসমেন্ট রেট টনপ্রতি ১৩.৫ ডলার ও বোল্ডার পাথরের এসেসমেন্ট রেট টনপ্রতি ১৩ ডলার নির্ধারণের জন্য আমদানিকারকগণকে চাপ দিচ্ছেন। অন্যথায় কাস্টম্স কর্তৃপক্ষ আমদানিকারকগণকে মামলা-মোকদ্দমার ভয় দেখান। ইতোমধ্যে অনেক আমদানিকারকের বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়েছে। কাস্টম্স কর্তৃপক্ষের এ রকম অনিয়মের ফলে ব্যবসায়ীরা ভীত-সন্ত্রস্ত। অনেক ব্যবসায়ী দেউলিয়া হয়ে গেছেন।
আমদানিকারকগণ জানান, তাদের অনেকেই দেশের অন্যান্য জেলার সীমান্ত দিয়ে পণ্য আমদানি করে থাকেন, কিন্তু সিলেটের মতো ব্যবসায়ীদেরকে এত হয়রানি আর কোথাও করা হয়না।
এ বিষয়টি সুরাহায় আমদানিকারকগণ সিলেট চেম্বারের সহযোগিতা কামনা করেন এবং বিষয়টি সুরাহা হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত বৃহত্তর সিলেটের সকল সীমান্ত দিয়ে সকল ধরনের পণ্য আমদানি বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন।
এ ব্যাপারে সিলেট চেম্বার সভাপতি তাহমিন আহমদ বলেন, ব্যবসায়ীদের প্রদানকৃত ভ্যাট-ট্যাক্স ও রাজস্বের মাধ্যমে সরকারের ব্যয় নির্বাহ হয়। তাই ব্যবসায়ীদের সুবিধা-অসুবিধা দেখা সরকারের একান্ত দায়িত্ব। আমদানিকারকদের সমস্যাবলী আলোচনাক্রমে নিরসনের জন্য গত ১০ আগস্ট সিলেট চেম্বারের পক্ষ থেকে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারকে আলোচনা সভার আহবান জানিয়ে পত্র প্রেরণ করা হলেও এখন পর্যন্ত পত্রের কোন উত্তর পাওয়া যায়নি। উপরন্তু কাস্টমস কর্মকর্তাগণ আমদানিকারকগণকে হয়রানি করে যাচ্ছেন।
বর্তমান সরকার ব্যবসায়ীদের প্রতি যথেষ্ট আন্তরিক উল্লেখ করে তিনি আশা প্রকাশ করেন, সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সাথে আলোচনার মাধ্যমে এ বিষয়টি সুরাহা করা যাবে।
এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিলেট চেম্বারের সহসভাপতি মো আতিক হোসেন, পরিচালক মুজিবুর রহমান মিন্টু, সারোয়ার হোসেন ছেদু, সুনামগঞ্জ চেম্বারের পরিচালক মো খসরুল আলম, সিলেট কয়লা আমদানিকারক গ্রুপ, তামাবিল পাথর চুনাপাথর ও কয়লা আমদানিকারক গ্রুপ, তাহিরপুর কয়লা আমদানিকারক গ্রুপ (বড়ছড়া, চারাগাঁও, বাগলি), ভোলাগঞ্জ চুনাপাথর আমদানিকারক গ্রুপ ও ছাতক আমদানিকারক গ্রুপের পক্ষ থেকে বশির আহমদ, মো আলকাছ উদ্দিন খন্দকার, জয়দেব চক্রবর্তী, মো ইউনুছ আলী, মো নাজিম উদ্দিন, মো নাসির উদ্দিন, জাকারিয়া ইমতিয়াজ জাকির, মো নজরুল ইসলাম, চৌধুরী আর এইচ শাহিন, সেলিম চৌধুরী, মজিবুর রহমান প্রমুখ। সূত্র সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
Leave a Reply